জুঠন : এক দলিতের আত্মকথা
ওমপ্রকাশ বাল্মীকি
ভাষান্তর : অ্যাঞ্জেলিকা ভট্টাচার্য
বিয়েবাড়ি বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে যখন অতিথি বা বরযাত্রীদের আপ্যায়ন করে খাবার খাওয়ানো হত, তখন চুহড়ে জাতির মানুষ বড় বড় ঝুড়ি নিয়ে দরজার বাইরে অপেক্ষা করত। বরযাত্রীদের খাওয়া হয়ে যাওয়ার পর তাদের এঁটো পাতার থালা সেই ঝুড়িতে দিয়ে দেওয়া হত। তারা বাড়ি গিয়ে সেই এঁটো খাবার, পাতা থেকে সযত্নে সংগ্রহ করে আনন্দ পেত। এক আধ টুকরো বেঁচে যাওয়া লুচির টুকরো, মিষ্টির এক আধকণা নয়তো পাতায় লেগে থাকা তরকারির অংশ পেয়েই বাচ্চাদের মুখ হাসিতে ভরে উঠত। খুব মজা করে সেই উচ্ছিষ্ট খাওয়া হত। আর যে বরযাত্রীর খাবার-পাতা একদম চাঁচাপোঁছা থাকত তাদের বলা হত কোথা থেকে এইসব বুভুক্ষু লোক এসে জুটেছে! বরযাত্রীরা মনে হয় কোনোদিন খেতে পায়নি। তাই সব কিছু চেটেপুটে খেয়ে গেছে। এই উচ্ছিষ্ট নিয়েও বয়স্করা মজার মজার কথা শোনাত। তারা একেক সময় রোমাঞ্চিত হয়ে কিছু স্মৃতি ভাগ করে নিত। একবার, এমন বরযাত্রী এসেছিল যে প্রচুর এঁটোকাঁটা পাওয়া গেছিল। কয়েক মাস ধরে সেগুলো খাওয়া গেছিল। কেউ যে উচ্ছিষ্ট পাওয়ার স্মৃতিও এত আনন্দ সহকারে মনে রাখতে পারে ভাবা যায় না। জুঠন পড়তে পড়তে মনে হয় সমাজ কতটা নিষ্ঠুর! সেখানে ক্ষমা নামের বস্তু নেই। কিন্তু ওমপ্রকাশ বাল্মীকি সেই সমাজকে ভয় পাননি। পাঠককে অবাক হতেই হবে এই নির্ভীক লেখকের লেখা পড়ে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি